ফরিদগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের ভয়ে অতিষ্ঠ পিতা, পুলিশের হাতে তুলে দিলেন নিজেই

ফরিদগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের ভয়ে অতিষ্ঠ পিতা, পুলিশের হাতে তুলে দিলেন নিজেই

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের ভয়ে অতিষ্ঠ হয়ে অবশেষে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন এক অসহায় পিতা। রবিবার (১৭ আগস্ট) সকালে উপজেলার রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের গাব্দেরগাঁও গ্রামের দিনমজুর বাবুল হোসেন (৫০) নিজ হাতে ছেলেকে বেঁধে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাবুল হোসেনের বড় ছেলে হাছান (২৫) দীর্ঘদিন ধরে মাদকাসক্ত। দুই সন্তানের জনক হাছান প্রায়ই মাদকের টাকার জন্য পিতা-মাতা ও পরিবারের সদস্যদের ওপর নির্যাতন চালাতেন। সম্প্রতি তার ঘরে আরও একটি নবজাতকের জন্ম হলেও সেই সন্তানের হাসি তাকে নেশার কবল থেকে ফেরাতে পারেনি।

ঘটনার দিন সকালে হাছান মাদকের টাকার জন্য মা আম্বিয়া বেগম ও বাবা বাবুল হোসেনকে মারধর করেন এবং ঘরের আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে বেঁধে ইউপি সদস্য লিটন হোসেনকে খবর দেন। তার পরামর্শে পুলিশকে অবহিত করা হয়।

এক নজরে মূল তথ্য

তথ্যবিবরণ
ঘটনার তারিখ১৭ আগস্ট (রবিবার) সকাল
স্থানফরিদগঞ্জ, রূপসা উত্তর ইউনিয়ন, ৮নং ওয়ার্ড, গাব্দেরগাঁও গ্রাম
অভিযুক্তহাছান (২৫), মাদকাসক্ত, দুই সন্তানের জনক
অভিযোগমাদকের টাকার জন্য পরিবারকে মারধর, আসবাবপত্র ভাঙচুর
ভুক্তভোগী পরিবারপিতা বাবুল হোসেন (৫০, দিনমজুর), মা আম্বিয়া বেগম
পদক্ষেপস্থানীয়দের সহায়তায় অভিযুক্তকে বেঁধে পুলিশে সোপর্দ
স্থানীয়দের বক্তব্যআগেও পুলিশের হাতে দেওয়া হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে
ইউপি সদস্যের মতামতমাদকের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে
পুলিশের বক্তব্যঅভিযুক্ত হেফাজতে, আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, একাধিকবার পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হলেও আগে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদিকে, অসহায় মা আম্বিয়া বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। ছেলে মেয়েরা খুন করলেও বাবা-মা তাদের পক্ষ নেয়। কিন্তু এ ছেলে আমাদের পুরো পরিবার ধ্বংস করে দিয়েছে। যারা তার হাতে মাদক তুলে দিয়েছে, তারাই আসল অপরাধী। তাদের প্রতি আল্লাহর লানত বর্ষিত হোক।”

ইউপি সদস্য লিটন হোসেন জানান, মাদক সমাজকে ধ্বংস করছে। এজন্য সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ শাহ আলম বলেন, হাছানকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *