চাঁদপুরে সড়কে নির্মাণ সামগ্রী, দুর্ঘটনায় সিএনজি চালকের মৃত্যু

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট-পেন্নাই সড়কের কালিভাংতি এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী সড়কে ফেলে রাখার কারণে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মোঃ বাপ্পি খান (২৭) নামে এক সিএনজি চালকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত বাপ্পি চাঁদপুর সদর, ০৩ নংকল্যাণপুর ইউনিয়ন, ৫ নং ওয়ার্ড, কল্যাণদী গ্রামের কান্তার খান বাড়ি নিবাসী।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বাবুরহাট-পেন্নাই সড়কের কালি ভাংতি এলাকায় নির্মাণ সামগ্রী সড়কে ফেলে রাখার কারণে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মোঃ বাপ্পি খান (২৭) নামে এক সিএনজি চালকের মৃত্যু হয়েছে। নিহত বাপ্পি চাঁদপুর সদর, ০৩ নংকল্যাণপুর ইউনিয়ন, ৫ নং ওয়ার্ড, কল্যাণদী গ্রামের কান্তার খান বাড়ি নিবাসী।

ঘটনা ঘটে সোমবার (১৮ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কের উপর রাখা ইটের স্তূপে ধাক্কা খেয়ে সিএনজি উল্টে যায়। এসময় পিছন থেকে আসা একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিএনজিটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই চালকের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শী শাহজালাল বেপারী জানান, ট্টাক চাপায় ঘটনাস্থালেই মারা যান বাপ্পী। সিএনজিতে কোন যাত্রী ছিল না। সন্ধ্যার নাস্তা নিয়ে বাড়ী ফেরার পথে এই দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, এখানে একটা ছোট ব্রীজ নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। দীর্ঘদিন ধরে ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ ব্যস্ত এই সড়কে ইট ও অন্যান্য সামগ্রী ফেলে রেখেছিল। এলাকাবাসী বারবার সরানোর অনুরোধ জানালেও কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি। এর ফলে প্রতিনিয়ত সেখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছিল। সোমবারের দুর্ঘটনায় একজনের প্রাণ হারাতে হলো।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের টেবিল

বিষয়বিবরণ
তারিখ১৮ আগস্ট ২০২৫, সোমবার
সময়রাত ৮টা
স্থানবাবুরহাট-পেন্নাই সড়ক, কালিভাংতি এলাকা (দাস বাড়ি সম্মুখে), রালদিয়া, আড়ং বাজার, চাঁদপুর সদর
নিহতের নামবাপ্পি (২৭)
ঠিকানাকল্যাণদী গ্রাম, কল্যাণপুর ইউনিয়ন, চাঁদপুর সদর
দুর্ঘটনার কারণসড়কে রাখা নির্মাণ সামগ্রীতে সিএনজির ধাক্কা, পরে ট্রাক চাপা
ফলাফলঘটনাস্থলেই সিএনজি চালকের মৃত্যু, যানজট সৃষ্টি
স্থানীয় অভিযোগঠিকাদারকে ইট সরাতে বলা হলেও ব্যবস্থা নেননি
পুলিশের পদক্ষেপট্রাক ও চালক আটক, সিএনজি ও ট্রাক জব্দ, মরদেহ থানায় নেওয়া হয়েছে

দুর্ঘটনার পর দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ট্রাক ও চালককে আটক করেছে এবং সিএনজি ও ট্রাক জব্দ করেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়দের মতে, ঠিকাদারের অবহেলা এবং প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাবুরহাট-পেন্নাই সড়ক, কালিভাংতি এলাকায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অন্যান্য সড়ক দুর্ঘটনা সমূহ

  1. ১০ আগস্ট ২০২৫ (রোববার দুপুর)রালদিয়া–কালিভাংতি অংশ (ময়দানখোলা সংলগ্ন)
    বেপরোয়া গতির মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনায় এক শিক্ষার্থী নিহত। স্থানীয় প্রতিবেদনে নিহতের নাম রুবেল হোসেন শিশির (১৮) (Chandpur Info)
  2. ৮ জুন ২০২৫ (রবিবার বিকেল) — পেন্নাই রোড, মতলব অংশ (কালিভাংতির একই করিডোর)
    বাস–সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত, ৬ জন আহত। (The Daily Star)

গুরুত্বপূর্ণ তথ্যের টেবিল

তারিখস্থান/সেগমেন্টজড়িত বাহনপ্রাণহানি/ক্ষতিমূল কারণ/পর্যবেক্ষণসূত্র
১৮ অগাস্ট ২০২৫ রাতকালিভাংতি মোড়সিএনজি, ট্রাকসিএনজি চালক বাপ্পি (২৭) নিহতসড়কে ইটের স্তূপ; রাতের সময়, ভিজিবিলিটি কম(Daily Janakantha, Focus Mohona)
১০ অগাস্ট ২০২৫ দুপুররালদিয়া–কালিভাংতি (ময়দানখোলা পাশে)মোটরসাইকেল১ শিক্ষার্থী নিহতঅতিরিক্ত গতি/নিয়ন্ত্রণহীনতা(Chandpur Info, kalerkantho.com, prottokkhodorshi.com)
৮ জুন ২০২৫ বিকেলপেন্নাই রোড (মতলব অংশ)বাস, সিএনজি২ নিহত, ৬ আহতসম্মুখসম্মুখ সংঘর্ষ; করিডোর ঝুঁকিপূর্ণ(The Daily Star)

বিশ্লেষণমূলক আলোচনা

১) করিডোর-লেভেল ঝুঁকি (কালিভাংতি ও আশপাশ):
কালিভাংতি সংলগ্ন অংশে অবৈধ/অসতর্ক নির্মাণসামগ্রী মজুদ, রাতের কম দৃশ্যমানতা এবং গতিনিয়ন্ত্রণের অভাব—এই তিনটির সমাবেশ দেখা গেছে। ১৮ অগাস্টের ঘটনাটি ঠিকাদারি তদারকির ঘাটতি ও সড়কে সামগ্রী ফেলে রাখার সরাসরি পরিণতি। (Daily Janakantha, Focus Mohona)

২) আচরণগত ঝুঁকি:
১০ অগাস্টের দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলের বেপরোয়া গতি/নিয়ন্ত্রণহীনতা স্পষ্ট—যুব চালকদের মধ্যে হেলমেট, গতিসীমা ও লেনে থাকার অভ্যাস দুর্বল। (Chandpur Info, chandpurbulletin.com)

৩) অবকাঠামো ও প্রয়োগের ফাঁক:
একই করিডোরে (পেন্নাই রোড) বারবার সম্মুখসম্মুখ সংঘর্ষরাতের দুর্ঘটনা ইঙ্গিত দেয়—রোড ফার্নিচার (ক্যাটস-আই/রিফ্লেক্টর), সতর্কবার্তা সাইনেজ, স্ট্রিটলাইট, স্পিড-ক্যালমিং যথেষ্ট নয়; ট্রাফিক আইন প্রয়োগও দুর্বল। (The Daily Star)

৪) তথ্যের অসঙ্গতি ও সমন্বয়:
১০ অগাস্টের ঘটনায় মৃতের নাম–বয়স নিয়ে স্থানীয় সূত্রে অসঙ্গতি রয়েছে (রুবেল হোসেন শিশির/রুবা)—এটি মাঠপর্যায়ের তথ্য যাচাই ও কেন্দ্রীয় ডেটা-লগিংয়ের ঘাটতি নির্দেশ করে। (chandpurbulletin.com, kalerkantho.com)

করণীয় (তাৎক্ষণিক ও স্বল্পমেয়াদি)

  • নির্মাণসামগ্রী-শূন্য সড়ক: কালিভাংতি–রালদিয়া–ময়দানখোলা অংশে কাজ চলাকালে সামগ্রী সড়কে না রাখা, বাধ্যতামূলক বেরিকেড/কন/রিফ্লেক্টিভ টেপ, এবং রাতের অস্থায়ী লাইটিং নিশ্চিত করা; লঙ্ঘনে ঠিকাদারকে দণ্ড। (১৮ অগাস্টের ঘটনার প্রেক্ষিতে অগ্রাধিকার) (Daily Janakantha)
  • গতিনিয়ন্ত্রণ: কালিভাংতি মোড়ের দুই পাশে রাম্বল স্ট্রিপ/স্পিড বাম্প, ৪০০–৬০০ মিটার আগে ‘ডেঞ্জার–কার্ভ’ সাইন, এবং রাতের মোবাইল স্পিড-মনিটরিং। (chandpurbulletin.com, The Daily Star)
  • দৃশ্যমানতা বৃদ্ধি: স্ট্রিটলাইট পুনর্বিন্যাস, কার্ভে ক্যাটস-আই/ডিলিনিয়েটর পোস্ট বসানো; বর্ষায় রোড-মার্কিং রিফ্রেশ। (The Daily Star)
  • হটস্পট এনফোর্সমেন্ট: সন্ধ্যা–রাতের পিক-আওয়ারে হেলমেট/লাইসেন্স/গতিসীমা চেক; স্থানীয় হাইওয়ে/থানা পুলিশের যৌথ চেকপোস্ট। (chandpurbulletin.com)

মধ্যমেয়াদি

  • ‘কালিভাংতি করিডোর সেফটি অডিট’: সড়কের জিওমেট্রি, ট্রাফিক ভলিউম, ক্র্যাশ-ম্যাপিং (শেষ ১২–২৪ মাস) করে ইঞ্জিনিয়ারিং–এনফোর্সমেন্ট–এডুকেশন (3E) প্যাকেজ নকশা।
  • ডেটা একীকরণ: থানা, হাসপাতাল ও স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট একীভূত করে একটি জেলা-ড্যাশবোর্ড; এতে নাম/বয়স/স্থান অসঙ্গতি কমবে এবং হটস্পটগুলো দ্রুত ধরা যাবে।

১০–১৮ অগাস্টের ভেতরে কালিভাংতি করিডোরে পরপর প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটেছে—একটি অবকাঠামোগত অবহেলা (সড়কে ইট), অন্যটি আচরণগত ঝুঁকি (বেপরোয়া গতি)। একই সড়কে জুন মাসে আবার সম্মুখসম্মুখ সংঘর্ষে বহু হতাহতের নজির রয়েছে। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা (সামগ্রী অপসারণ, সাইনেজ/লাইট, স্পিড-ক্যালমিং, এনফোর্সমেন্ট) ও মধ্যমেয়াদি রোড-সেফটি অডিট নিলে এ করিডোরে দুর্ঘটনা-ঝুঁকি দ্রুত কমানো সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *