ডেঙ্গু সতর্কতা এবং ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ৬ টি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

ডেঙ্গু সতর্কতা এবং ডেঙ্গু জ্বর সম্পর্কে ৬ টি গুরুত্বপুর্ণ তথ্য

হাসপাতালে এখন ডেঙ্গু রোগীদের ভীড়। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশব্যাপী ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন ৩১৯ জন এবং মারা গিয়েছেন ৩ জন। সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এই সময়টিতে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে ডেঙ্গু জ্বরের সময়কাল আরও এগিয়ে এসেছে। এই বছর জুন মাস থেকেই ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে।

চলুন ডেঙ্গু সম্পর্কে কয়েকটি বিষয় জেনে নেয়া যাকঃ

1️⃣ ডেঙ্গুর লক্ষণ

ডেঙ্গুর প্রধান লক্ষণ—জ্বর। ৯৯ থেকে ১০৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠতে পারে। জ্বর টানা থাকতে পারে, আবার ঘাম দিয়ে জ্বর ছেড়ে দেওয়ার পর আবারও আসতে পারে। এর সঙ্গে শরীরে ব্যথা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা এবং চামড়ায় লালচে দাগ বা ফুসকুড়ি দেখা যায়।

ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো সাধারণৎ দুই থেকে সাত দিন থাকে। অধিকাংশ রোগী সপ্তাহখানেক পর সুস্থ্য হয়ে উঠেন। তবে কিছু কিছু রোগীকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে।

2️⃣ কখন হাসপাতালে নিবেন ?

প্রতি ২০ জনের মধ্যে ১ জন ডেঙ্গু রোগীর অবস্থা আশংকাজনক হতে পারে এবং সেই ক্ষেত্রে রোগীকে অতি দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। গুরুতর ডেঙ্গুর লক্ষণগুলো হচ্ছেঃ

– পেট ব্যথা
– বমি (২৪ ঘণ্টায় অন্তত ৩ বার)
– নাক অথবা দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত
– রক্তবমি অথবা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া
– অত্যন্ত ক্লান্ত বা অস্থির বোধ করা
– কিছু খেতে না পারা

এই উপসর্গ গুলোর দুই একটি দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত।

3️⃣ ডেঙ্গু হলেই কি হাসপাতালে নিতে হবে?

ডেঙ্গু রোগীকে সাধারণত তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়ঃ A, B, C.

সুখবর হচ্ছে- অধিকাংশ রোগীরাই A ক্যাটাগরির। তাদের সুধু জ্বর থাকে এবং তারা স্বাভাবিক ভাবেই সুস্থ্য হয়ে উঠেন। তাদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন নেই।

তবে B এবং C ক্যাটাগরির রোগী, যাদের মধ্যে উপরোক্ত গুরুতর লক্ষণগুলো আছে, তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা আবশ্যক। এছড়াও যদি দেখা যায় যে – দুই দিন জ্বরের পড় শরীর ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, তাহলে সেইসব রোগীদেরকেও হাসপাতালে ভর্তি করা উচিত।

4️⃣ ডেঙ্গু হলে কী খাবেন?

ডেঙ্গু হলে প্রচুর পরিমাণে তরল জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন – ডাবের পানি, লেবুর সরবত, ফোলের জুস, এবং খাবার স্যালাইন। এমন নয় যে প্রচুর পানি খেতে হবে। তবে পানি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে এবং সম্পুর্ন বিশ্রামে থাকতে হবে।

5️⃣ কি ঔষধ খাওয়া যাবে এবং যাবে না?

ডেঙ্গু হলে জ্বর প্রশমনের জন্য প্যারাসিট্যামল খাওয়া যাবে। কিন্তু, রোগীর যদি লিভার, হার্ট এবং কিডনি সংক্রান্ত জটিলতা থাকে সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করতে হবে। ব্যথা কমানোর জন্য অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করা যাবে না। ডেঙ্গুর সময় অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করলে রক্তক্ষরণ হতে পারে। তবে যেকোন ঔষধের ক্ষেত্রেই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।

6️⃣ ডেঙ্গু প্রতিরোধে কি করবেন?

ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা। সাধারণত সকালের দিকে এবং সন্ধ্যার কিছু আগে এই মশা তৎপর হয়ে উঠে। এরা সধারনত স্বচ্ছ পানিতে ডিম পাড়ে। তাই এডিস মশা প্রতিরোধের জন্য আপনার বাড়ির আঙ্গিনা, ছাদ, ফুলের টব কিংবা অন্যান্য পাত্রে পানি জমতে দিবেন না। নিয়মিত জমে থাকা পানি পরিষ্কার করুন, এডিস মশার বংশবিস্তার প্রতিরোধ করুন।

সচেতন হোন, সুস্থ্য থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *